ডাকসু নির্বাচনে কারা লড়বে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি: ছাত্রশিবির
সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে আবারও ‘টক অব দ্যা টপিকে’ পরিণত হয়েছে ডাকসু নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচনেও প্রকাশ্যে নির্বাচন করেনি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। শোনা যাচ্ছে, দীর্ঘ সময় পরে এবার নিজ ব্যানারে ডাকসু নির্বাচন করবে শিবির। আলোচনায় সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম এবং বর্তমান সভাপতি এস এম ফরহাদ হোসেন। এই দুজনকে ভিপি আর জিএস বানিয়ে বেশকিছু গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়েছে।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সেক্রেটারি মহিউদ্দিন খান অভিযোগ করেছেন, তার বক্তব্যকে কোট করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং অনলাইন পোর্টালে, যে তথ্য ছড়ানো হচ্ছে সেটি সঠিক নয়। ছাত্রশিবির থেকে ডাকসু নির্বাচনে কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সোমবার (১১ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানান তিনি। সেখানে তিনি জানান, আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে কারোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়টি চুড়ান্ত নয়।
আরও পড়ুন- যেসব কারণে ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ ট্রাম্প
প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে সেই স্ট্যাটাসে মহিউদ্দিন লিখেছেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, সে বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। কিন্তু আজকে আমাকে কোট করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং অনলাইন পোর্টালে ছাত্রশিবির থেকে ভিপি এবং জিএস পদে কারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন তা সংক্রান্ত ফটোকার্ড এবং সংবাদ ছড়ানো হচ্ছে বলে লক্ষ্য করছি।’
সাংগঠনিকভাবে এখনও কারো প্রার্থিতা চূড়ান্ত করা হয়নি জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে যে, সাংগঠনিকভাবে এখনো কারোর প্রার্থিতার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করবো। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে কারোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়টি চূড়ান্ত নয়।’
তবে গুঞ্জন আছে, এবার ডাকসুর সকল পদেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে ছাত্রশিবির। সেজন্য বেশ হিসাব কষেই নির্বাচনের মাঠে আসতে চাইছে সংগঠনটি। আগামী ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের প্যানেলে প্রার্থীতা নির্বাচনেও দেখা যেতে পারে চমক।
ইতোমধ্যেই ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর হবে ডাকসু নির্বাচন। গতকাল সোমবার চূরান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ১২ আগস্ট থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে।
তফসিল অনুযায়ী, ১৯ আগস্ট মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন। এরপর ২০ ও ২১ আগস্ট প্রার্থীদের সাধারণ তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৫ আগস্ট মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এরপর ২৬ আগস্ট প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
প্রসঙ্গত, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময় চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছে ছাত্রশিবির। শেখ হাসিনার গত ১৫ বছরে ক্রসফায়ারসহ বিভিন্নভাবে প্রাণ হারিয়েছে সংগঠনটির অন্তত দুই শতাধিক নেতা-কর্মী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল ক্যাম্পাসেই শিবির সন্দেহ হলেই নির্যাতনের পরে তুলে দেওয়া হতো পুলিশের হাতে।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে নতুন করে প্রাণসঞ্চার হয়েছে সংগঠনটিতে। দেশের সকল ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করছে ছাত্রশিবির। শিক্ষার্থী বান্ধব বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রশংসায়ও ভাসছে সংগঠনটি।