হারলেও যেভাবে এশিয়ান কাপে খেলবে বাংলাদেশ
অনুর্ধ্ব- ২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই ম্যাচেই জয় তুলে নিয়ে আশা জাগিয়েছে মূলপর্বে খেলার। প্রথম ম্যাচে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা স্বাগতিক লাওসের বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে তিমুর-লেস্তেকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে কোচ পিটার বাটলারের দল। জয় পেয়েছে ৮-০ গোলের ব্যবধানে।
দুই ম্যাচ শেষে ‘এইচ’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-২০ দল। ৬ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে টেবিল টপার আফঈদা-সাগরিকারা। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে দুই নম্বর দল দক্ষিণ কোরিয়া।
বাছাইয়ে ৩২টি দলকে ৮টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন আর সেরা তিন রানার্সআপ দল খেলবে মূলপর্বে। সাধারণ ভাবে সহজ সমীকরণ বাংলাদেশের সামনে। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে জিতলে কিংবা ড্র করলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মূলপর্বে খেলবে বাংলাদেশ।
তবে, সেটা সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। কারন শক্তিমত্তা কিংবা র্যাংকিং; দুই দলের পার্থক্য যোজন যোজন। এশিয়ান জায়ান্ট দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের চেয়ে ৮৩ ধাপ এগিয়ে। তাদের অবস্থান ২১ আর বাংলাদেশের ১০৪। তাই প্রশ্ন হলো- যদি দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে হেরে যায় বাংলাদেশ, তাহলে কি সুযোগ আছে মূলপর্বে খেলার? উত্তর, হ্যাঁ সুযোগ আছে। তবে মেলাতে হবে যদি-কিন্তুর হিসাব।
আরও পড়ুন- বিসিবি সভাপতির বসবাস নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন ইমরুল কায়েস
এখন পর্যন্ত সবগুলো গ্রুপের সবগুলো দলই দুটি করে ম্যাচ খেলেছে। সবাই নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে আজ। তবে, তার আগেই কয়েকটি গ্রুপের ফলাফল নিশ্চিত হয়ে গেছে। ‘এ’ গ্রুপ থেকে মূলপর্ব খেলবে উত্তর কোরিয়া। দুই ম্যাচ শেষে তাদের পয়েন্ট ৬। শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ দুইয়ে থাকা নেপাল। তাই নেপালের সুযোগ নেই।
‘বি’ গ্রুপ থেকে খেলবে ভিয়েতনাম। এ গ্রুপ থেকেও রানার্সআপ দল সুযোগ পাচ্ছে না। ‘সি’ গ্রুপটা কিছুটা ভিন্ন। এই গ্রুপেও চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। ৬ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে অনেক এগিয়ে থেকে টেবিলের শীর্ষে আছে অস্ট্রেলিয়া। টেবিলের দুই নম্বরে থাকা চাইনিজ তাইপের পয়েন্টও সমান ৬। তারা আছে দুই নম্বরে। তাদের গোল ব্যবধান +৭। তবে, শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। এ ম্যাচে নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে থাকবে অস্ট্রেলিয়া। তাই কমে যেতে পারে চাইনিজ তাইপের গোল ব্যবধান।
‘ডি’ গ্রুপ থেকে মিয়ানমার কিংবা ভারত সুযোগ পাবে। সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষ দুই দল মুখোমুখি হবে শেষ ম্যাচে। যারা জিতবে তারা কোয়ালিফাই করবে। ‘ই’ গ্রুপ থেকেও চীন কিংবা লেবাননের যেকোনো একটি দল যাবে। শেষ ম্যাচে যারা জিতবে তারাই কোয়ালিফাই করবে।
‘এফ’ গ্রুপে সমান ৬ পয়েন্ট জাপান আর ইরানের। গোল ব্যবধানে (+২১) এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে জাপান। ইরানের গোল ব্যবধান +৫। শেষ ম্যাচে মুখোমুখি এই দুই দল। শেষ ম্যাচে ফেবারিট জাপান। তাই ইরানের সম্ভাবনাও খুবই ক্ষীণ।
‘জি’ গ্রুপের লড়াইটাও বেশ জমে উঠেছে। সমান ৬ পয়েন্ট উজবেকিস্তান ও জর্ডানের। তবে গোল ব্যবধানে (+১৬) এগিয়ে থাকায় গ্রুপের শীর্ষ দল উজবেকিস্তান। গোল ব্যবধানে (+১১) পিছিয়ে থাকায় জর্ডান আছে দুইয়ে। শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। এখানেও কিছুটা ফেবারিট উজেবিকস্তান। তবে, দুই দলের গোল ব্যবধান খুব বেশি নাহলে এই দলই থাকবে মুলপর্বের লড়াইয়ে।
এবারের হিসাবটা ‘এইচ’ গ্রুপের অর্থাৎ বাংলাদেশের গ্রপের। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার পয়েন্ট ৬। তবে, গোল ব্যবধানে (+১০) এগিয়ে থাকায় বাংলাদেশ আছে গ্রুপের শীর্ষে। পিছিয়ে থেকে (+১০) দুইয়ে দক্ষিণ কোরিয়া।
পয়েন্ট টেবিল বলছে- সেরা তিন রানার্সআপ দলের লড়াইয়ে আছে জর্ডান (+১১), দক্ষিণ কোরিয়া (+১০), চাইনিজ তাইপে (+৭)।
এখন বাংলাদেশ যদি শেষ ম্যাচে জয় পায় কিংবা ড্র করে তাহলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে কোয়ালিফাই করবে। হারলেও হারতে হবে কম ব্যবধানে। সেক্ষেত্রে সুযোগ থাকবে সেরা তিন রানার্সআপ হিসেবে। তখন বাংলাদেশের লড়াই হবে জর্ডান, চাইনিজ তাইপে আর ইরানের সঙ্গে।
সেখানে অবশ্য ইরান অনেক পিছিয়ে আছে। বর্তমানে তাদের গোল ব্যবধান +৫। শেষ ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে হারলে সেটি আরও কমে যাবে।
‘সি’গ্রুপ থেকে সেরা তিনের লড়াইয়ে থাকা চাইনিজ তাইপে বিস্ময়কর কিছু না করলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারলে তাদেরও গোল ব্যবধান আরও কমবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভাবনা আরও বাড়বে।
এখন মুলপর্বে কোয়ালিফাই করতে বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানে হার এড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ। সেই আশা দেখাচ্ছে শেষ ম্যাচে লাওসের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার পারফরম্যান্স। স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাত্র ১-০ গোলের কষ্টের জয় পেয়েছে তারা। তাই বাংলাদেশ যদি আজ নিজেদের সেরাটা দিতে পারে, তাহলে দক্ষিণ কোরিয়াকে রুখে দিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।